রূপকথা - বনফুলের শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প
 |
রূপকথা- বনফুলের শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প |
রূপকথা
বনফুল
সুন্দর জ্যোৎস্না!
চারিদিকে জনমানবের সাড়া নাই। গভীর রাত্রি। দূর হইতে
নদীর কলকল ধ্বনি ভাসিয়া আসিতেছে। নির্জন প্রান্তরে একা দাঁড়াইয়া আছি। স্বপ্ন-বিহ্বল নেত্রে দেখিতেছি, জ্যোৎস্নায়
ভুবন ভাসিয়া যাইতেছে। কুৎসিত জিনিসও সুন্দর হইয়া উঠিল। ওই পচা- ডোবাটাও যেন জরিদার
কাপড় পরিয়া মোহিনী সাজে সাজিয়াছে। আকাশের কালো মেঘটাতেও রূপালি আবেশ।
নির্জন প্রান্তরে একা দাঁড়াইয়া আছি।
তাহারই প্রতীক্ষায়। তাহারই প্রতীক্ষায় এই গভীর রাত্রির সমস্ত জ্যোৎস্নাও যেন
পরিপূর্ণ হইয়া উঠিয়াছে।
আসিতেছে।— হাঁ, ওই যে!
সর্বাঙ্গে তাহার জ্যোতস্নার আকুলতা। তাহার নুপুরশিঞ্জনে জ্যোৎস্না শিহরিয়া উঠিতেছে।...ওই সে
আমার পানে চাহিয়া হাসিল।
সহসা একটা দুর্ধর্ষ দস্যু কোথা হইতে ছুটিয়া আসিয়া
সেই কিশোরীর বুকে ছুরি বসাইয়া দিল। জ্যোৎস্নায় শাণিত ছোরাটা চকচক্ করিয়া উঠিল! রক্তের ধারায় জ্যোৎস্না ডুবিয়া
গেল।
উর্ধ্বশ্বাস ছুটিয়া গিয়া লোকটাকে ধরিলাম। ধরিয়া
দেখি—
এ কি, এ যে আমারই বিবেক!
0 মন্তব্যসমূহ