বিষয় যখন বাংলা, তখন বাংলা ভাষা এবং বাংলা সাহিত্য নিয়ে গভীর
মনোযোগ ও অধ্যবসায় নিয়ে পাঠাভ্যাস করতে হবে। ওপর ওপর পড়লে ভালো ফল পাওয়া যায় না। বাংলা
ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে রচিত অনেক বই পাওয়া এখনকার দিনে খুবই সহজ হয়েছে। এই বইগুলি নিবিষ্টচিত্তে
পড়তে হবে। পরীক্ষার প্রস্তুতি মাথায় রেখেও এগোতে হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়স্তরে
যা যা পাঠ্য তালিকায় রয়েছে সে সম্পর্কে অবহিত হতে হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে
যাতে সহজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায় সেইদিকটি অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা দরকার। কেননা,
বাংলা বিষয়ে সাধারণত বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষকতার প্রচুর পদে
নিয়োগ হয়ে থাকে। বাংলা ছাড়া অন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করে শিক্ষকতার চাকুরি করার
এত সুযোগ থাকে না। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের পরীক্ষায়
অসাধারণ ফললাভ করেও স্কুল সার্ভিস বা নেট বা সেট পাস করতে পারছে না। অথচ তারই সহপাঠী সাধারণ ফল করা ছাত্রটি
নেট বা সেট অথবা কলেজ সার্ভিস কমিশন বা স্কুল সার্ভিস কমিশন কিংবা পাবলিক সার্ভিস কমিশন
আয়োজিত পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করতে পারছে। এর আসল কারণ হল, সেই বিশেষ ছাত্রটির খুঁটিয়ে
পড়ার অভ্যাস। যেন তেন প্রকারেণ ডিগ্রি অর্জন করলেই জীবনে সাফল্য আসবে এমন ভাবা ভুল।
আবার আগে তো ডিগ্রি অর্জন করি বা পাস করি, পরের কথা পরে ভাবা যাবে – এরকম করলে সাফল্য
পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এর জন্যে দীর্ঘকালীন নিষ্ঠা, শ্রমের অভ্যাস, নিয়মিত অনুশীলন
করার মানসিকতা ও জেদ থাকা দরকার। এক্ষেত্রে মেধা থাকাটা খুব জরুরী নয়। মানসিক দৃঢ়তাই
সাফল্যের একমাত্র চাবিকাঠি হতে পারে। কলেজ
বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার জন্যে সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষা নেট বা রাজ্যস্তরের পরীক্ষা
সেট উত্তীর্ণ হতে হবে। এই পরীক্ষায় বসতে গেলে ন্যূনতম স্নাতকোত্তরে ৫৫% নাম্বার পেতে
হয়। অর্থাৎ বি.এ. এম. এ. ইত্যাদি পরীক্ষার ফল যথাসম্ভব ভালো করতেই হবে। সেইজন্য প্রথম থেকেই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি
অকৃত্রিম ভালবাসা এবং অধিকার বোধ জন্মাতে হবে। প্রায় হাজার বছরের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের
প্রতি অনুরাগ, আকর্ষণ না জন্মালে এই বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করা বৃথা। আমাদের লক্ষ্যই হল
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ জীবনে সাফল্যের ও উৎকর্ষের আঙ্গিনায়
পৌঁছতে সাহায্য করা। আজকের দিনে অনলাইন বা আন্তর্জাল প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষও
ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। সোশাল সাইটে অহেতুক সময় অপচয় করে নিজের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে
নিমজ্জিত করার কোন দরকার নেই। এগুলো থেকে সামাজিকতার শিক্ষা যা হয়, তার থেকে অসামাজিক
কথাবার্তা বা কার্যকলাপের রমরমা অনেক বেশি চোখে পড়ে। তাই এসব থেকে নিজেকে সযত্নে দূরে
সরিয়ে রাখাই ভাল। দু’লাইনের ট্যুইট নিয়ে দু’দিন ধরে তর্ক-বিতর্ক না চালিয়ে – দু’পাতা
বাংলা সাহিত্য পাঠ করা ভালো। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে গেলে আজেবাজে জায়গায় জ্ঞান জাহির
করার দরকার পড়ে না। সাময়িক তর্ক-বিতর্কের পথে গিয়ে অহেতুক জ্ঞানী সাজার চেষ্টা কিংবা
নিজের অমূল্য সময়ের অপচয় করা আসলে নিজের পায়ে কুড়ুল মারা। তাই এসব থেকে বিরত থেকে নিজের
লক্ষ্যে অবিচল থেকে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে আজ থেকেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে। শুভেচ্ছা জানাই। সঙ্গে থাকুন। ভালো থাকুন।
কে সেই নারী - ভোলানাথ মাহাত
-
*ছোটগল্প : কে সেই নারী*
*লিখেছেন: ভোলানাথ মাহাত*
“আপনি ভুল করছেন, আমি মহুয়া নই।”
এক ফাগুনের ক্লান্ত ভোরে যখন কোকিল অচঞ্চল বেগে তার নিজস্বতা বজায় রেখে চলেছে...