Header Ads Widget

WELCOME! ** 100% MOBILE FRIENDLY ONLINE EDUCATIONAL BLOG ** বাংলা সাহিত্য চর্চা ** WELCOME! ** 100% MOBILE FRIENDLY ONLINE EDUCATIONAL BLOG ** বাংলা সাহিত্য চর্চা **

ticker

6/recent/ticker-posts

বাংলা অলংকার (২য় পর্ব)

 বাংলা অলংকার (২য় পর্ব) 
লঙ্কারের সাধারণ শ্রেণীবিভাগ

কোন বাক্য যখন পড়া হয়, তখন তার দু’টি দিক আমাদের আকৃষ্ট করে। শব্দের ধ্বনি (Sound) আমাদের কর্ণগোচর হয়, অর্থ (Sense) হয় মনোগোচর। কোন বাক্যকে অলঙ্কৃত করার অর্থ শব্দের ধ্বনিরূপ কিংবা অর্থরূপকে অলঙ্কৃত করা । তাই শব্দের ধ্বনিরূপ ও অর্থরূপের আশ্রয়ে দুই শ্রেণীর অলঙ্কার সৃষ্টি করা হয়। যথা – (১) শব্দালঙ্কার ও (২) অর্থালঙ্কার।

(১) শব্দালঙ্কার : শব্দের ধ্বনিরূপের আশ্রয়ে যে সমস্ত অলঙ্কারের সৃষ্টি হয়, তাদের শব্দালংকার বলে।

মনে রাখা দরকার শব্দের ধ্বনিরূপ পরিবর্তন করলে এই শ্রেনীর অলঙ্কার আর ঠিক থাকে না।

উদাহরণ : এ নহে কুঞ্জ কুন্দকুসুমরঞ্জিত৷ (রবীন্দ্রনাথ)

ব্যাখ্যা: এখানে কুধ্বনিটি পর পর তিনটি শব্দের প্রথমে বিন্যস্ত হয়ে বাক্যটির ধ্বনি-সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। একই স্বরধ্বনিসমেত একই ব্যঞ্জন বর্ণের পুনঃপুনঃ সমাবেশের ফলে শব্দালঙ্কারের সৃষ্টি হয়েছে।

শব্দালঙ্কারের বিভিন্ন শ্রেণী আছে- তার মধ্যে অনুপ্রাস, যমক, বক্রোক্তি ও শ্লেষ প্রধান।

 

১। অনুপ্রাস

একই বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছের পুনঃপুনঃ বিন্যাসকে অনুপ্রাস বলে

উদাহরণ :

(১) হায়রে হৃদয়

তোমার সঞ্চয়

দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়। -রবীন্দ্রনাথ।

ব্যাখ্যা: এখানে দিনান্তে’, ‘নিশান্তে’ প্রান্তেএই তিনটি শব্দে ‘আন্তে’ বর্ণগুচ্ছের বারবার বিন্যাসের দ্বারা ধ্বনিগত সৌন্দর্য সম্পাদন করা হয়েছে। বর্ণগুচ্ছের পুনঃপুনঃ সমাবেশের ফলে বাক্যগত বা শব্দগত অর্থ একেবারে প্রভাবিত হয়নিসুতরাং উদ্ধৃতিটিতে অনুপ্রাস অলংকার হয়েছে।

(২) অনেক অপার অতি প্রভুর করণ।

কহিতে অকথ্য কথা না যায় বর্ণন। -আলাওল।

ব্যাখ্যা: এখানে প্রথম পংক্তিতে স্বরধ্বনি পর পর তিনটি শব্দের প্রথমে উচ্চারিত হয়ে বাক্যটির ধ্বনিসৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে, তবে তা বাক্যটির অর্থ-সম্পদ বৃদ্ধি করে নিসুতরাং এখানে অনুপ্রাস নামক শব্দালঙ্কার হয়েছে।

উল্লেখ করা প্রয়োজন, কোন কোন আলংকারিক স্বরধবনির পুনঃপুনঃ বিন্যাসকে অনুপ্রাস বলে  স্বীকার করেন নি। তাঁরা সাহিত্য-দর্পণের মত উদ্ধৃত করে বলেন, স্বরবর্ণের বারবার উচ্চারণের মধ্য দিয়ে ধ্বনিগত বৈচিত্র্য দেখা দেয় না বলেই তাকে অনুপ্রাস বলা চলে না। কিন্তু আমরা ভিন্ন মত পোষণ করি। প্রথমত ইংরেজীতে যদি আদ্য স্বরবর্ণ নিয়ে ‘Alliteration’ হতে পারে, বাংলায় কেন অনুপ্রাস হবে না? দ্বিতীয়ত, স্বরসাম্যের চেয়ে ব্যঞ্জনসাম্য অধিকতর ধ্বনি-বৈচিত্র্য সৃষ্টি করলেও স্বরসাম্য একেবারেই ধ্বনি-বৈচিত্র্য সৃষ্টি করে না এমন কথা কি বলা চলে না।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ